শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়
শীতকাল এলেই যেন সর্দি-কাশি বেড়ে যায়। এ সময় ভাইরাস সংরক্রমণ বেড়ে
যায়। ছোট বড় সবারই এই সর্দি-কাশি লেগে থাকে। আপনি যদি চান ঘরোয়া
পদ্ধতিতে আপনার সর্দি-কাশি দূর করতে তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার
জন্য।
কারণ এখন আমি আলোচনা করব কিভাবে গরম
পানির সাথে, আদা, লবঙ্গ, এলাচ, মধু, তুলসী পাতা সব
উপকরণ সঙ্গে মিশিয়ে কিভাবে ঘরোয়াভাবে সর্দি-কাশি দূর করবেন। তাই অবশ্যই
আমার এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি জানতে
পারবেন যে কিভাবে ঘরোয়া উপাদানে আপনার সর্দি-কাশি দূর করবেন।
পেজ সূচিপত্রঃ শীতকাল সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়
- শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ৪টি উপায়
- শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপকরণ
- শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে ভালো থাকবেন যেভাবে
- কোন উপাদানে সারবে সর্দি-কাশি
- শীতকালে এলার্জি থেকে বাঁচার উপায়
- লেখকের শেষ মন্তব্যঃ
শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ৪টি উপায়
শীতের ঠান্ডায় শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও কমে
যায়। তাই শীতকালীন সময়ে সব সময় নিজের যত্ন নেওয়া উচিত। না হলে
শীতকালে সর্দি-কাশি সহ আরো বিভিন্ন অঙ্গে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
আরু পড়ুনঃ
চুলের যত্নে সরিষা তেলের উপকারিতা
শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ৪টি কাজ-
- পেঁয়াজঃ পেঁয়াজ আমাদের খাবারের স্বাদের পাশাপাশি দেহের পুষ্টি ও যোগায়। পেঁয়াজের রস আর মধু যদি একসাথে মিশিয়ে খান তাহলে সর্দি-কাশির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এছাড়া পিঁয়াজ ক্যান্সার কেও দূরে রাখে। পেঁয়াজ কিন্তু আমাদের হজম শক্তি ও বাড়ায়। যাদের হজম শক্তি কম আছে তারা চাইলে পেঁয়াজ খেতে পারেন।
- রসুনঃ শরীর সুস্থ থাকার জন্য রসুনের উপকারিতা অনেক রয়েছে। রসুনে থাকা এলিসিন নামে একটি উপাদান যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে। কাঁচা রসুন খেলে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রসুন খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও দূর হয়ে যায়। রসুনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়ান, অনেকটা ওষুধের মত কাজ করে। যাদের ঠান্ডা ঘনঘন লেগে যায় তারা টান্ডা থেকে মুক্তি পেতে রসুনের রস খেলে অনেক উপকার পাবেন।
- হলুদ-আদা চাঃ সর্দি-কাশি বেশি হলে অনেকে আমরা আদা খায়। যাদের শ্বাসকষ্ট তারা আদা চিবিয়ে খেলে অনেক আরাম পায়। আদা চিবিয়ে খাওয়ার কারণে ফুসফুসে থাকা দূষিত পদার্থ দূর হয়।
- তুলসী পাতাঃ সর্দি-কাশি ভালো করার আরেকটি উপকরণ হলো তুলসী পাতা বা তুলসী পাতার রস। তুলসী পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, পদার্থ এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণ। তুলসী পাতার রস আর একটু মধু মিশিয়ে খেলে আপনার সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্ট থেকে তাড়াতাড়ি আরাম পেতে পারবেন।
শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপকরন
শীতকাল সর্দি কাশি দূর করার জন্য আমাদের হাতে কাছে সব উপকরণ আছে। এই সমস্ত
ঘরোয়া উপাদান দিয়ে আমরা আমাদের সর্দি-কাশিকে দূর করতে পারবো। আপনি
যদি ঘরোয়া উপাদানে সর্দি-কাশি দূর করতে চান তাহলে এই পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে
পড়তে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে শীতকালে সর্দি কাশি থেকে
বাঁচবেন।
- তুলসী পাতা ও মধুঃ তুলসী পাতায় রয়েছে পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যদি আপনি সর্দি-কাশি সমস্যায় বোগেন তাহলে তুলসী পাতার রস আর মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। তাহলে আপনি আরাম পাবেন। আর আপনার সর্দির-কাশি ও কমে আসবে।
- গরম পানির ভাপঃ আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে সর্দিতে ভুগেন তাহলে আপনি গরম পানির চেক নিতে পারেন। একটা পাতিলে পানি গরম করে তার উপরে একটা নরম কাপড় দিয়ে ওই গরম পানি ভাপটা আপনার ভিতরে নিবেন আবার ফেলবেন তাহলে দেখবেন আপনার সমস্যাটা দূর হয়ে যাবে। যাদের ঠান্ডা লাগলে নাক বন্ধ হয়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে এই টা অনেক উপকারে আসবে
- লবণ পানিঃ সর্দি সমস্যা দূর করার জন্য আরেকটি ঘরোয়া উপায় হল লবণ পানি গরম পানির সাথে লবণ মিশিয়ে খেলে সর্দি সমস্যাটি কমে আসবে। কারণ লবণ পানি সর্দি কমিয়ে আনে।
- এলাচ ও লবঙ্গঃ একটা পাতিলে এলাচ আর লবঙ্গ দিয়ে পানিটা ভালো করে ফুটিয়ে ওই পানিটা খেতে পারেন তাহলে আপনার সর্দি-কাশি কমিয়ে আনা সম্ভব।
- মধুঃ শীতকালে আমাদের দেহের আদ্রতা কমে আসে তার জন্য আমাদেরকে শীতের সময় একটু একটু করে মধু খেতে হবে যাতে আমাদের শরীরে গরম থাকে। আর শরীর যদি গরম থাকে তাহলে আপনার সর্দি-কাশিও কম হবে।
শীতকালে সর্দি-কাশি থেকে ভালো থাকবেন যেভাবে
শীতকাল এলেই যেন সর্দি-কাশি বেড়ে যায়। যার জন্য ছোট বড় সকলকেই সর্দি
কাশির সমস্যায় ভুগতে হয়। যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
কম, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি আরো বেশি হতে পারে। তবে একটু সতর্ক
হলেই নিজেকে সুস্থ রাখা সম্ভব। তাহলে আর দেরি না করে জেনে আসি সর্দি কাশি
থেকে কিভাবে ভালো থাকবেন।
- ১। হালকা শীত পড়ার আগে আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে। সচেতনভাবে গরম জামা-কাপড় পড়ে থাকতে হবে। যাতে করে শরীর সব সময় গরম হয়ে থাকে। শরীর যদি সব সময় গরম হয়ে থাকে তাহলে টান্ডা লাগে না। অনেকে আছে আবার এলোসতা করে গরম জামা পড়তে চাই না। আবার অনেকে আছে লজ্জায় পড়তে চাই না।
- বলে যে এখনো শীত পড়েনি কেউতো শীতের জামা-কাপড় পরতেচেনা আমি পড়বো কে কি বলবে এই ভেবে অনেকেই গরম জামা-কাপর পড়তে চায় না। এইসব দেবে যে তার নিজের ক্ষতি হবে সেটা পাবে না। তাই হালকা শীত আসলেই সম্পূর্ণ গরম কাপর পড়েই বাইরে বের হতে হবে।
- ২। শীতকালে খাবারের যত্ন নিতে হবে। সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে কিছু পরামর্শ মেনে চললে সুস্থ থাকা সম্ভব। এ সময় গরম গরম খাবার খাওয়া দরকার। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রসুন ও গোলমরিচ রাখার চেষ্টা করবেন।
- ৩। সর্দি হলে তুলসী পাতার রস আর মধু মিশিয়ে খাবেন। বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য তুলসী পাতা প্রয়োজন ১০-২০ টি পাতার রস বের করে মধু দিয়ে মিশিয়ে খেলে সর্দি থেকে আরাম পাবেন।
কোন উপাদানে সারবে সর্দি কাশি
ঠিক আসলেই সর্দির কাশি বেড়ে যায়। এ সময় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
বেড়ে যায়। ছোট বড় সবারই সর্দি-কাশি দেখা দেয়। তাই এ সময় শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সর্দি-কাশি
হলে আদা দিয়ে চা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
আমাদের সবার রান্না ঘরে আদা থাকে। এই সামান্য ঘরোয়া উপদান দিয়ে সর্দি
থেকে আরাম পেতে পারেন। শুনতে আশ্চর্য ব্যাপার হলো এটাই সত্যি যে আদা একটি
ঔষধি গুন।
আরু পড়ুনঃ জবা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
আদায় আছে অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। যা দ্রুত গলা ব্যাথা কমে
যায়। আদা দিয়ে চা খেয়ে অথবা যদি আধার টুকরা মুখে দিয়ে রাখেন তাহলেও
দেখবেন আপনার খুসখুসে কাশি কিংবা গলা ব্যাথা কমে যাবে।
শীতকালে এলার্জি থেকে বাঁচার উপায়
শীতকালে এলার্জি থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আমার এই পুষ্টি মনোযোগ
সহকারে পড়তে হবে। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কমে আসে এবং বিভিন্ন জামা কাপড়
থেকেও এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে। আমাদেরকে অবশ্যই এলার্জি জনিত সমস্যা থেকে
দূরে থাকতে হবে। চলুন তাহলে জানি যে শীতকালে এলার্জি থেকে বাঁচার
উপায় সম্পর্কে।
শীতকালে যে খাবারে এলার্জি নেই সেই সমস্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যাতে
করে আপনার এলার্জি বেড়ে না যায়। এলার্জি রয়েছে এমন সকল বিষয় থেকে
আমাদেরকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে যেমন দুলা
ভালো, ইত্যাদি। অতিরিক্ত পরিমাণে যদি অ্যালার্জি হয় তাহলে
আমাদেরকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি যে শীতকালে সর্দি কাশি থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে। আশা করি আপনি এতটুকু বুঝতে পেরেছেন যে কিভাবে ঘরোয়া উপাদানে
সর্দি-কাশি সারাবেন।
শীতকালে ছোট বড় সবাইকেই সর্দি-কাশি থেকে সাবধানে থাকতে হবে। আশা করি এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের কিছুটা হলেও উপক্ষিত করতে পেরেছি।
সিপা আইটির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন