বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কি সমস্যা হয়
বিড়াল বর্তমানে আমাদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি প্রাণী। বিড়াল পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। কম-বেশ আমরা সবাই বিড়াল পছন্দ করি। ছোট বড় সবার কাছে বিড়াল সব প্রাণী হিসাবে অতি সমাদূত। এই প্রাণী খুব সহজেই পোষ মানে। ইদানিং শহরে বাসা বাড়িতে অনেকে বিড়াল পালন করতেছে। ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলার সঙ্গী বিড়াল।
আমাদেরও একটা বিড়াল ছিল আচর মারার কারণে ওর মায়ের কাছে দিয়ে চলে এসেছি। যেহেতু মানুষের সাথেই প্রায় সব সময় বিড়ালের বিড়ালের বসবাস, তাই কোন সময় আচর লাগতে পারে। তাই অনেকের মনে প্রশ্ন যে বিড়াল আছর দিলে কি কোন সমস্যা হয়? চলুন জেনে আসি বিড়ালের নখের আঁচলে কি কি সমস্যা হয়?
পোস্ট সূচিপত্রঃ বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কি সমস্যা হয়
- বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কি সমস্যা হয়
- ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজিজ (Cat Scratch Disease- CSD)
- ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা সংক্রমণ
- টিটেনাস
- ফাঙ্গাল ইনফেকশন
- এলার্জি এবং প্রদাহ
- সেফটিজ বা রক্ত সংক্রমণ
- লিম্ফডেনাইটিস
- শেষ কথাঃ
বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কি সমস্যা হয়
বিড়ালের নখের আঁচড়ে মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা দেখা দিতে
পারে। যেমন-
- ওজন হ্রাস
- র্যাস
- পেটে ব্যাথা
- হঠাৎ হঠাৎ ঠান্ডা অনুভব করা
- হাড়ের বা জোড়ায় ব্যাথরে
- ঠোঁটে সংক্রমণ
- ক্ষুধামন্দা
বিড়ালের আচরে এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ক্লিনিক্যালি নির্ণয় করা হয়
থাকে। পলিমারেজ চেয়ে রিয়েকশনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ সনাক্ত করে
নিশ্চিত হওয়া যায়। এটি তেমন মারাত্মক না হলেও কখনো কখনো অনেক জটিলতা জন্ম
দেখা যায়।
যেমন ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কে এনসেফালোপ্যাথি, চোখের রেটিনাতে পৌঁছে নিউরোরেনাইটিস ও অকুলোগ্ল্যান্ডুলার সিনড্রোম দেখা যেতে পারে।
ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজিজ (Cat Scratch Disease- CSD)
- এটি মূলত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা হয়, যার নাম বার্টোনেলা হেনসেলে। বিড়ালের নখের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।
- এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত আচড়ে স্থানে ফুলে যায় এবং লালচে ভাব দেখা দেয়। এরপর ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা প্রায় ৩- ১৪ দিনের মধ্যে সংক্রমণ চারাতে শুরু করে দেয়।
- এ রোগের লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যাথা, ক্লান্তি অনুভব হয় এবং লিম্ফ নোডে ফোলাভাব। তাই শিশু এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্য এটি বেশ ঝোঁকিপূর্ণ হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা সংক্রমণ
- আমরা হয়তো অনেকেই জানি না বিড়ালের নখে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যেমন স্ট্যাঁফিলোককাস এবং স্টেপ্টেককাস। বিড়ালে আঁচড়ের মাধ্যমে ত্বকে এগুলো সংক্রমণ হলে ফোলাভাব লালচে ভাব হয়ে ব্যাথা হতে পারে।
- এক্ষেত্রে সংক্রমণটি বেশি হলে এটি সেলুলাইটিস বা ত্বকের গভীরে সংক্রমণ কারণ হতে পারে।
টিটেনাস
- আপনারা হয়তো জানেন না বিড়ালের আঁচড়ে সরাসরি টিটেনাস ছড়ায় না। তবে আঁচড়ের কারণে ক্ষস্তানে টিটেনাসের ব্যাকটেরিয়া "ক্লস্টিডিয়াম টিটানি" প্রবেশের ঝুঁকি বাড়ে।
- টিটেনাসে আক্রান্ত হলে গাড়ির বেশি সংকুচিত হয়ে রক্ত বা শ্বাসকষ্টের মত মরণঘাতি হতে পারে।
- কেউ যদি টিটেনাসের টিকা না দিয়ে থাকে, তাহলে তাদের অনেক বেশি টিটেনাসের ঝুকি বেড়ে যাবে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন
- বিড়ালের নখের বিভিন্ন ধরনের পাঙ্গাস থাকতে পারে। আঁচড়ের মাধ্যমে এগুলো সংক্রমণ ঘটায়, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চর্মরোগ।
- সংক্রমণ হলে বিড়ালের স্থানে চুলকানি বা লালচে দাগ হয়ে যায়। এরপরে খুব দ্রুত শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং অস্থিতির কারণ হয়।
এলার্জি এবং প্রদাহ
অনেক সময় বিড়ালে আঁচড়ের নখের টাকা জীবন থেকে এলার্জি হয়। আঁচড়ের পরে ত্বকে
লালচে ভাব, চুলকানি, পোলা ভাব এলার্জির লক্ষণ গুলো দেখা
যায়।
যদি আঁচড়ে স্থানে প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন থাকে এবং ফুলে যায়,
পরবর্তীতে একটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
সেপসিস বা রক্ত সংক্রমণ
যদি বিড়ালে আঁচড়ের মাধ্যমে রক্তচাপ পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তাহলে
সেপসিস হতে পারে। এটি খুব বিপদজনক অবস্থা, তাহলে পুরো শরীর
সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।
সেপটিতে আক্রান্ত হলে চলে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এবং তো তীব্র
শারীরিক দুর্বলতা অনুভব হয়। ব্লাড প্রেসার দ্রুত কমে যেতে পারে এবং মরণঘাতি
হতে পারে। এমত অবস্থায় জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
লিস্ফডেনাইটিস
লিস্ম নোডগুলো সংক্রমিত হয়ে ফুলে গেলে তাকে বলা হয় লিস্মডেনাইটিস। বিড়াল আঁচড় দিলে এটা হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে।
লিস্মডেনাইটিস এর লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে ঘার, বাহুর নিচে কুঁচকি
ফুলে যাওয়া। আবার সব জায়গাতে ব্যাথা অনুভব হতে পারে।
শেষ কথাঃ
ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি বিড়ালের নখের আঁচড়ে কি কি সমস্যা হয়। আশা করি
বুঝতে পেরেছেন। বিড়াল আমরা অনেকেই খুব শখ করে পুষি কিন্তু মাঝে মাঝে
বিড়াল রেগে গেলে আঁচড় মারে যার কারনে আমাদের ক্ষতি হতে পারে।
তার জন্যই বলছি বিরাল পুষবেন ভালো কথা কিন্তু খুব সাবধানে বিড়াল পালতে গেলে অবশ্যই এ পোস্টটি একবার পড়ে নিবেন।
সিপা আইটির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন