ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ১০ টি কার্যকরী উপায় জেনে নিন

সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ( ভিসার দাম ও যোগ্যতা)

ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে অনেকেরই মনে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ এই রোগে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। স্বাভাবিকভাবে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে মানুষের মাঝে প্রবল উদ্যোগ তৈরি হয়েছে। 

সূচিপত্রঃডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ১০ টি কার্যকরী উপায় 

• ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কি?
• জ্বর হলে কি চিন্তিত হবেন?
•  বিশ্রামে থাকতে হবে
• কী খাবেন?
• যেসব ওষুধ খাওয়া উচিত নয়
• প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তিত?
• ডেঙ্গু হলেই কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়?
• ডেঙ্গুর জ্বরের সময়কাল
• এসিড মশা কখন কামড়ায়
• পানি জমিয়ে না রাখা
• লেখক এর শেষ কথা

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কি

সাধারণভাবে ডে ঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর।  ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আর মাঝে মাঝে গান দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবার জ্বর আসতে পারে। 

এর সাথে আপনার শরীল ব্যথা, মাথাব্যাথা, চোখের পেছনে ব্যাথা এবং ঠাণ্ডা লাগছে ডাক র‍্যাশ হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।  

জ্বর হলে কি চিন্তিত হবেন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গুর সময়, তাই তোর হলে অবহেলা করা উচিত নয়। জ্বরে আক্রান্ত হলে সাথে-সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ দিচ্ছেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ।  

তিনি বলেছেন, ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তারা জোরকে অবহেলা করেছেন। তবে জ্বরের সাথে যদি সর্দি-কাশি, প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিনব অন্য কোন বিষয়ে জড়িত থাকে তাহলে সেটি ডেঙ্গু না হয়ে অন্য কিছু হতে পারে। তবে জ্বর হলে সচেতন থাকা ভালো। 

বিশ্রামে থাকতে হবে

সরকারের কমিউনিক্যাবল ডিজিট কন্ট্রোল বা সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অন্যতম পরিচালক ডঃ, সানিয়া তাহমিনা বলেছেন, "জ্বর হলে বিশ্রামে থাকতে হবে। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, জোর নিয়ে দৌড়াদৌড়ি না করাই ভালো। 

একজন ব্যক্তি সাধারণত প্রতিদিন যেসব পরিশ্রমের কাজ করে, সেগুলো না করাই ভালো।  জ্বর উঠলে পরিপূর্ণ বিশ্রামের প্রয়োজন। 

কি খাবেন

জ্বর উঠলে প্রচুর পরিমাণের তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন- ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে পারে। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।

যেসব ঔষুধ খাওয়া উচিত নয়

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। চিকিৎসকরা বলেছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে চার গ্রাম। 

কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি লিভার,  হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত  জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে  অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষুধ খাওয়া যাবে না।

প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তিত 

ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা এখন আর মূল ফ্যাক্টর নয় বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক তাহমিনা। তিনি বলেন, "প্ল্যাটিলেট কাউন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কোন প্রয়োজন নেই। বিষয়টি চিকিৎসকের উপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো। 

সাধারণত একজন মানুষের রক্তে  প্ল্যাটিলেট কাউন্ট থাকে দেড়-লাখ থেকে সাড়ে চার-লাখ পর্যন্ত। 

ডেঙ্গু হলে কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়

ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ভাগ রয়েছে এ ভাগগুলো হচ্ছে-

• "এ"
• "বি"
• "সি"

প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা নরমাল থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী "এ" ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হবার কোন প্রয়োজন নেই। "বি" ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের সবই স্বাভাবিক থাকে, কিন্তু শরীরের কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।   

আরু পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করনীয়

 যেমন তার পেটে ব্যথা হতে পারে, বমি হতে পারে প্রচুর কিংবা সে কিছুই খেতে পারছে না। অনেক সময় দেখা যায়, দু দিন জ্বরের পরে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।

 "সি" ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। কিছু-কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে। 

ডেঙ্গুর জ্বরের সময় কাল

সাধারণ জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এই সময়টিতে এসিড মশার বিস্তার ঘটে। 

কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সময় কাল আরো এগিয়ে এসেছে। এখন জুন মাস থেকে ডেঙ্গু জ্বরের সময় শুরু হয়ে যাচ্ছে। 

এসিড মশার কখন কামড়ায় 

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালের দিকে এবং তাই কিছু আগে এডিস মশা তৎপর হয়ে উঠে।  এসিড মশা কখনো অন্ধকারে কামড়ায় না। 

পানি জমিয়ে না রাখা

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেছেন, "এডিস মশা" 'ভদ্র মশা' হিসেবে পরিচিত। এসব মশা সুন্দর-সুন্দর ঘরবাড়িতে বাস করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।অ্যাডিস মশা সাধারণত ডিম পারে পাড়ে স্বচ্ছ পানিতে। কোথাও যাতে পানি তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি জমা না থাকে।

এ পানি যেয়ে কোন জায়গায় জমতে পারে। বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দায় ফুলের টপে, নির্মাণাধীন ভমনের বিভিন্ন পয়েন্টে, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা টায়ার কিংবা অন্যান্য পাত্রে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে। 

লেখক এর শেষ কথাঃ 

প্রিয় পাঠক ইতিপূর্বে আমরা আলোচনা করেছি ডেঙ্গু জ্বরে কি কি করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত। আশা করি আপনাদের ডেঙ্গু জ্বর হলে  বিষয়টি মেনে চলুন সব সতর্ক থাকা ভালো। 

আরো নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।