গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা





গর্ভকালীন সময়ে প্রথম তিন মাস সাধারণত তেমন বেশি খাবারের প্রয়োজন হয়। না তবে পরের মাসগুলোতে স্বাভাবিকের সময়ের তুলনায় বাড়তি খাবার খেতে হয়। এ সময় সুষম খাবারের খাদ্য তালিকা মেনে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভকালীন সময়ে খাবারের তালিকায় খাদ্য স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

 
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

এটি গর্ভকালে পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করে এবং বাচ্চার সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। সুষম খাবার আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠা ও বিকশিত হওয়া এবং সঠিক ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে।  এ সময়ে সুষম খাবারের  খাদ্য তালিকা মেনে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারে নতুন সদস্যর কল্যাণের জন্য আপনার খাবার তালিকায় কিভাবে পরিবর্তন আনবেন সেটা নিয়ে আজকের টিপস।

পেইজ সূচিপএঃ গর্ভবতী মায়ের ৭টি খাবার তালিকা

গর্ভবস্থায় খাবার তালিকা কেমন হওয়া দরকার

গর্ভকালীন সময়ে একই ধরনের খাবার বেশি রাখা ঠিক নয়। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার রাখার চেষ্টা করবেন। খাদ্য তালিকার প্রধান উদ্দেশ্য হলো একজন গর্ভবতী মায়ের দৈনিক পুষ্টিগত চাহিদা পূরণ করা। একজন মায়ের শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন, ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ক্যালরি ইত্যাদি নির্দিষ্ট ও বৈজ্ঞানিকভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়। একটি সুসংহত এবং সঠিক খাদ্য তালিকা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, পুষ্টিগত ঘাটতি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এড়াতে সহায়ক।

গর্ভবস্থায় আপনাদের কোন কোন খাবারে বেশি রুচি আসতে পারে। এক্ষেত্রে বেশি খেয়ে ফেলা যাবে না। চেষ্টা করবেন পরিমাণ মতো খেতে।

আবার কারোও কারোও ক্ষেত্রে খাবারের ও রুচি হয়। বমি বমি ভাব হয় বুক জ্বালাপোড়া করে খাবার খেতে ইচ্ছে হয় না। সে ক্ষেত্রে ৩ বেলা বেশি করে না কে দিনে ৫-৬ বার অল্প অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কতটুকু খাবার বেশি খেতে হবে

গর্ভধারণ করেছেন বলে যে বাড়তি খাবার বেশি করে খেতে হবে বিষয়টি এমন নয়। প্রথম তিন মাস তেমন বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। তবে পরের মাসগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় একটু বেশি খেতে হবে। গর্ভবস্হায় কতটুকু খাবার খেতে হবে সেটা বুঝা যাবে খাবারের খেলে ক্যালরি সাহায্যে হিসাব করা যায়। গর্ভবস্থায় বেশি বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর জাতীয় খাবার রাখার চেষ্টা করবেন।

গর্ভবস্থায় কেন বাড়তি খাবার গ্রহণ করবেন?

গর্ভাবস্থায় মায়ের দৈনিক ক্যালরি চাহিদা বৃদ্ধি পায়, তবে এটি প্রয়োজনীয় চাহিদা অতিরিক্ত নয়।সাধারণ দ্বিতীয় এৈমাসিক থেকে প্রতিদিন বাড়তি ৩৪০ থেকে ৪৫০ ক্যালরির প্রয়োজন হয়, যদিও ক্যালরির এই চাহিদা ব্যক্তিগত রুচি ও শারীরিক পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে। সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং অপ্রয়োজনীয় বৃদ্ধি এড়াতে এই ক্যালরি উৎস হতে হবে পুষ্টিকর খাবার থেকে।


পর্যাপ্ত পানি পান করা কেন জরুরী

পর্যাপ্ত পানি পান করা গর্ভবস্থায় অত্যন্ত জরুরী পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে দৈনিক অত্যন্ত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। গ্লাস হিসেব করলে আপনাকে সারাদিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

১ মাস থেকে ৩ মাসে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

তাই প্রথম তিন মাস একজন মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়, প্রথম তিন মাস গর্ভবতী মায়ের লং জার্নিঙ না করাই ভালো, যখন ভ্রমণের প্রাথমিক বিকাশ ঘটে। এ সময়ে পুষ্টিগত ভিওি স্থাপন করা শিশুর ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরী ।

কেন ফলিক এসিড, ভিটামি, এবং খনিজ উপাদানের ওপর জোর দেওয়া উচিত

ফলিক এসিডঃ প্রথম এৈমাসিকে ফলিক এসিডের গ্রহণ ভ্রমণের নিউরাল টিউবের সটিক বিকাশ নিশ্চিত করে , যা মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের গঠনের সাহায্য করে। ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে , শাকসবজি, ডাল, এবং ফোরটিফাইড খাদ্য পণ্য।

শাকসবজি -- ভিটামিন,খনিজ, এবং ফাইবারের অসামান্য উৎস এগুলো প্রদাহ কমায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।

ডাল-- প্রোটিন, ফাইবার, এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজের উৎস এগুলো সবচেয়ে সরবরাহ এবং হজমে সাহায্য করে।

ফলিড এসিডঃ ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, আয়রন, এবং ক্যালসিয়ামের মতো ভিটামিন এবং খনিজ স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থায় নিশ্চিত করতে এবং ভ্রমণের সুস্থ বৃদ্ধিতে সহায়ক।

৪ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতীর খাবারের তালিকা

গর্ভের শিশু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে গর্ভবতী নারী খাবারের চাহিদা ও ধিরে ধিরে বাড়তে থাকে। তাই গর্ভধারণের প্রথম ৩ মাসের পর থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা খাবার বেশি খেতে হয়। একজন স্বাভাবিক ওজনের ৪ মাস থেকে ৯ মাস পর্যন্ত গর্ভবতী পথম তিন মাসের চেয়ে প্রতিদিন ৩৪০ ক্যালরি অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে একজন স্বাভাবিক ওজনের ৭ থেকে ৯ মাসের গর্ভবতী কে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত পায় ৪৫০ক্যালরি খাবার খেতে হবে। তবে আপনার ওজন বেশি হলে আরেকটু কম পরিমাণের অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে। এই বিষয়ে আপনি ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত পরামর্শ নিন।

অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন তিনবেলা খাবারের পাশাপাশি আরো দুই বেলা হালকা নাস্তা করতে পারেন। যেমন, দুধ, বাদাম, কাজুবাদাম,পেয়ারা, আপনার যে ধরনের ফল খেতে ভালো লাগে আপনি সেই ধরনের ফল খেতে পারেন। এবং খিদা লাগলে আপনি যেকোনো সময় সুস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন।




আরু পড়ুনঃ ৬ মাসে গর্ভবতী মায়ের আরু কিছু খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। একদিকে সন্তান জন্মদানের আনন্দ। অন্যদিকে মা ও সন্তানের সুস্থতা নিয়ে দুশ্চিন্তা। গর্ভকালীন সময়ে অনেকগুলো ধাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একেকটা ধাপের একেক ধরনের আসে। এ সময় গর্ভবতি মায়ের একটু যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ, মায়ের যত্নের উপর শিশুর জন্মের নির্ভর করে। গর্ভবতী মাকে সেবা দিতে অবহেলা করলে মা ও সন্তান উভয়ের জন্য ক্ষতি। পরিবারের সবাই একজন গর্ভবতী মায়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে পুষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে যাতে করে মা সন্তান দুজনই সুস্থ থাকে।

৬ মাসে গর্ভবতিমায়ের খাবার তালিকা

ভিটামিন সি
ফল
শাকসবজি
পসফরাস যুক্ত খাবার
তরল
শর্করা

ভিটামিন সি
৬ মাসের গর্ভবতীকে প্রচুর পরিমাণের ভিটামিন সি খাওয়ানো উচিৎ এ সময় শরীরের অনেক কিছু পরিবর্তন দেখা যায় ভিটামিন সি সমস্ত শরীরের যোগাযোগ কলার সাথে সংযুক্ত তৈরি করে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। ফলমূল, লেবু, কমলা, পেয়ারা, ইত্যাদি থেকে ভিটামিন সি গ্রহণ করা যায়।
ফল
ছয় মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফল রাখতে হবে। ফলে তাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, শরীরের অনেক ধরনের জটিলতা থেকে মুক্তি দেয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
শাকসবজি
ছয় মাসের গর্ভবতী মায়ের অনেক জটিলতা দেখা দেয়। আর পরিমাণে শাকসবজি এই সমস্যা দূর করতে। ৬ মাসের গর্ভবতি মাকে প্রচুর পরিমাণের শাকসবজি খেতে হবে।
ফসফরাস যুক্ত খাবার

৬ মাসের গর্ভবতী মায়ের ফসপরাসযুক্ত খাবার খেতে হবে কারণ এ সময় শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে। এ ঘার্ঠতি গুলো পূরণ করতে অবশ্যই পোস্ট করার জন্য খাবার খেতে হবে নাশপাতি, পেয়ারা, ও অন্যান্য ফলমূল পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খেলে ফসফরাসের চাহিদা পূরণ হয়।
তরল
একজন গর্ভবতী মা  কিন্তু নিজের জন্য খাচ্ছেন না সন্তানের শারীরিক চাহিদা ও পূরণ করতে হবে। তাই একজন গর্ভবতী মাকে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। এবং তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। জুস, সুপ, ও পাতলা খাবার গ্রহণ করতে হবে।
শর্করা
৬ মাসের গর্ভবতি মায়ের খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত শর্করা থাকতে হবে। কারণ এই সময়ে মায়ের শরীরে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন দুর্বল শরীর গর্ভপাতের কারন। ভাত, রুটি, গম, আলু, জাতীয় খাবার থেকে শর্করাপাওয়া যায়।

গর্ভবস্থায় কি খাওয়া যাবেনা

গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত তেল - চর্বি ও চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। যেমন, ভাজাপোড়া, মিষ্টি, ও কেক, পেস্টি। এসব খাবার বেশি খেলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি হার্টের নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও বেশি চিনিযুক্ত খাবার গেলে দাঁতেরও সমস্যা হয়।

সবমিলিও মা ও গর্ভের শিশুর নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে-

মাখন
ঘি - ডালডা
ক্রিম
চকলেট
ভাজাপোড়া
চিপস
বিস্কুট
কেক
পেস্টি
আইসক্রিম
পুডিং
কলা

এ ছাড়া এগুলো সাধারণ ক্যারিবহুল হয়। বলে একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, তেমনি অন্যদিকে ওজন বেড়ে গিয়ে গর্ভকালিন ডায়বেটিস সহ আপনার এর শিশুর নানান মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

এ সময়ে এমন কিছু খাবার পুরোপুরি ভাবে বাদ দিতে হবে। কেননা এসব খাবার আপনার গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। যেমন,

গরু, ছাগল ও বেড়ার অপস্তারিত দুধ

অর্ধ সিদ্ধ না হওয়া মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ

অর্ধ সিদ্ধ মাছ দিয়ে খাবার তৈরি খাবার। যেমন, সুশি

অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় । যেমন, চা-কপি এনার্জি ড্রিংক ও এবং ক্যাফিইন যুক্ত কোমল পানীয়

হারবাল বা ভেষজ ওষুধ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সিপা আইটির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন